ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করার ম্যাচে টাইগারদের যত রেকর্ড। আজকের সকালটা বাংলাদেশের জন্য বিশেষ হয়ে থাকবে। ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল, তখন বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পাল্টা ধবলধোলাইয়ের স্বাদ দিলো। সেটিও আবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দেশে গিয়ে।
২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের পর এই প্রথম তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে তাদের মাঠে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দিলো বাংলাদেশ। ভারত, পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ডের পর চতুর্থ দল হিসেবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে একাধিক ম্যাচের সিরিজে এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠবারের মতো প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করার কীর্তি।
এ ছাড়া স্মরণীয় সিরিজে আরও যত রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ:
৩৪ ছক্কা:
এক বছরে বাংলাদেশের হয়ে তিন ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড হয়েছে। রেকর্ড ছক্কা হাঁকিয়েছেন জাকের আলি। ৩৪টি। পেছনে পড়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৩০, ২০১৮) এবং আফতাব আহমেদ (২৯, ২০০৬)।
৮০ রান:
দুই দেশের মধ্যকার টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রানের ব্যবধানের জয়। ৮০ রান। এর আগে উইন্ডিজ জিতেছিল ৭৩ রানে।
১০৯ ম্যাচ:
টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারের রেকর্ড এখন উইন্ডিজদের। হেরেছে ১০৯ ম্যাচ। এতদিন এই রেকর্ডটি বাংলাদেশের ছিল। ক্যারিবিয়ানদের সিরিজ হারিয়ে নিজেদের বাজে রেকর্ড থেকে মুক্ত করেছে লিটন বাহিনী।
৩ ছক্কা:
মাত্র দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে শেষ ওভারে ৩টা ছক্কা হাঁকিয়েছেন জাকের আলি। এর আগে সৌম্য সরকার (প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে, ৯ই মার্চ, ২০২০)।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে শেষ ওভারে সর্বোচ্চ রান:
– ২৪ রান – জাকের আলি অনিক
– ২০ রান – মাশরাফি বিন মর্তুজা (প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড, ২০০৯, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ)
– ২০ রান – ইয়াসির আলি রাব্বি (প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, ২০২২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার রহস্য প্রকাশ করলেন লিটন
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার রহস্য উদঘাটন করেছেন লিটন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ড্র করলেও, ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর টাইগাররা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দারুণভাবে ফিরে এসেছে। ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে দারুণ প্রত্যাবর্তনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করেছে লিটন বাহিনী। এই সাফল্যের পিছনে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজের ব্যর্থতাই প্রধান প্রেরণা হিসাবে কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে লিটন বলেন, “আমরা টেস্ট ও ওয়ানডেতে ভালো খেলেছি। যদিও দুর্ভাগ্যবশত জিততে পারিনি, তবে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমরা জানতাম এখানে ভালো বোলিং উইকেট ছিল। আমরা যদি ভালো রান করতে পারি, তাহলে আমাদের ম্যাচ জেতার মতো বোলার আছে।”
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটে ফিল সিমন্স অধ্যায় শুরু হয়েছে। ঘরের মাঠে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এবং দুবাইতে আফগানদের কাছে হেরে টাইগাররা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায়। এই সিরিজে কোচের পক্ষ থেকে কোনো চাপ ছিল কিনা জানতে চাওয়া হলে লিটন বলেন, “সিমন্স কখনও চাপ দেন না। ক্রিকেট খেলায় আমরা স্বাধীনতা পাই। শুধু তিনি নন, সমস্ত কোচিং স্টাফ ও ম্যানেজমেন্ট আমাদের সাহায্য করেছে। আমরা প্রতিদিনই উন্নতি করছি। এই উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভালো ছিল এবং আমাদের বোলাররা যা করেছে, তা চমৎকার।”
এই দুর্দান্ত সাফল্য বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য গর্বের এবং আগামী দিনের জন্য আরও ভালো পারফরম্যান্সের প্রেরণা যোগাবে।