এক্সারসাইজ শুরু করা নিয়ে অলসতা! শুরুটা করবো কীভাবে?
এক্সারসাইজ শুরু করা নিয়ে অলসতা!

এক্সারসাইজ শুরু করা নিয়ে অলসতা! শুরুটা করবো কীভাবে?

এক্সারসাইজ শুরু করা নিয়ে অলসতা, এটি কিন্তু খুবই কমন! আমরা অনেকেই এক্সারসাইজ করতে চাই, কিন্তু অলসতা আমাদের আটকে রাখে। একদিকে আমরা জানি, শরীর সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম কতটা জরুরি, অন্যদিকে সেই ব্যায়াম শুরু করার কথা মনে হলেও গড়িমসি করতে থাকি। এর ফলে আমরা অনেক সময় এই ভালো অভ্যাসটি গড়তে পারি না। কিন্তু কীভাবে শুরু করবেন, এ বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনা পেলে হয়তো পরিস্থিতি বদলাতে পারে।

এক্সারসাইজ শুরু করতে অলসতা, এটি খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। আমাদের অনেকেরই ইচ্ছা করে ব্যায়াম করতে, কিন্তু অলসতা আমাদের আটকে রাখে। তবুও, শারীরিক সুস্থতার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম কতটা জরুরি তা আমরা জানি। তাই অলসতা কাটিয়ে এক্সারসাইজ শুরু করার কয়েকটি দিকনির্দেশনা দেয়া হলো:

শুরুটা কীভাবে করবেন?

অলসতা কাটিয়ে এক্সারসাইজ শুরু করতে হলে সহজ একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন। দিনে ২০-৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন এবং একটি নির্দিষ্ট সময় বেছে নিন, যেমন সকালে বা সন্ধ্যায়। বন্ধুদের সাথে একত্রে ব্যায়াম করুন, এতে উদ্দীপনা বাড়বে। এক্সারসাইজের সময় মিউজিক শুনুন বা প্রিয় ভিডিও দেখুন। ধীরে ধীরে ব্যায়ামের ধরন পরিবর্তন করুন, যেমন যোগ বা জগিং। বিষয়টিকে মজাদার করে তুলুন এবং লক্ষ্য স্থির করুন। প্রতিদিন কিছুটা অগ্রগতি করুন এবং নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে অলসতা কাটিয়ে উঠুন।

নবাগতা উপযোগী এক্সারসাইজ

যারা নতুন এক্সারসাইজ শুরু করতে চান, তাদের জন্য কিছু সহজ ও কার্যকর ব্যায়ামের পরামর্শ দেওয়া হলো:

  • 1. হাঁটা: দিনের শুরুতে বা সন্ধ্যায় প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট হাঁটুন। এটি শরীরকে ধীরে ধীরে সক্রিয় করে তোলা এবং শারীরিক সক্রিয়তা বাড়াতে সহায়ক হবে।
  • 2. হালকা জগিং: যদি হাঁটায় অভ্যস্ত হয়ে যান, তাহলে হালকা জগিং শুরু করতে পারেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ছোট দূরত্বে জগিং করুন, ধীরে ধীরে সময় এবং দূরত্ব বাড়ান।
  • 3. যোগব্যায়াম: যোগব্যায়াম শরীর ও মনের জন্য খুবই উপকারী। প্রাথমিক পর্যায়ে সহজ আসনগুলো চর্চা করুন, যেমন সূর্য নমস্কার, ত্রিকোণাসন, এবং ভুজঙ্গাসন।
  • 4. স্ট্রেচিং: স্ট্রেচিং ব্যায়াম শরীরের পেশী এবং জয়েন্টগুলোকে ফ্লেক্সিবল রাখে। এটি প্রতিদিন সকালে বা ব্যায়ামের আগে এবং পরে করতে পারেন।
  • 5. পুশ-আপ: প্রথমে হাঁটুতে ভর দিয়ে পুশ-আপ করতে শুরু করুন। প্রাথমিক পর্যায়ে কম সংখ্যক পুশ-আপ করুন, তারপর ধীরে ধীরে সংখ্যা বাড়ান।
  • 6. স্কোয়াট: স্কোয়াট একটি সহজ এবং কার্যকর ব্যায়াম। প্রথমে বিনা ওজনেই স্কোয়াট করুন, তারপর ধীরে ধীরে ওজন যোগ করতে পারেন।

কিছু সাধারণ টিপস:

  • – সময় নির্ধারণ: প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি সময় ব্যায়ামের জন্য নির্ধারণ করুন। এটি আপনাকে একটি রুটিন মেনে চলতে সহায়ক হবে।
  • – বন্ধুদের সাথে ব্যায়াম: বন্ধুদের সাথে ব্যায়াম করলে উৎসাহ বাড়ে এবং এক্সারসাইজ মজাদার হয়।
  • – মিউজিক শুনুন: এক্সারসাইজের সময় প্রিয় মিউজিক শুনলে ব্যায়াম করতে আরও মজা পাবেন।
  • – ছোট লক্ষ্য স্থাপন: প্রথমে ছোট ছোট লক্ষ্য স্থাপন করুন এবং ধীরে ধীরে তা বাড়ান। এটি আপনাকে উৎসাহিত করবে।

শিক্ষার্থীদের জন্য এক্সারসাইজ

শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত এক্সারসাইজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু শারীরিক স্বাস্থ্যই নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও বিশেষ উপকারী। কিছু সহজ ও কার্যকর ব্যায়ামের পরামর্শ দেওয়া হলো:

  • 1. হাঁটা বা জগিং: প্রতিদিন সকালে বা সন্ধ্যায় ২০-৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা জগিং করতে পারেন। এটি শরীরকে সক্রিয় রাখার একটি সহজ উপায়।
  • 2. স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ: পড়াশোনার মাঝে বা বিরতির সময় স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ করতে পারেন। এটি পেশীর চাপ কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।
  • 3. যোগব্যায়াম: যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে এবং মনকে শিথিল করতে সাহায্য করে। প্রাথমিক পর্যায়ে সহজ আসনগুলো চর্চা করতে পারেন, যেমন সূর্য নমস্কার, ত্রিকোণাসন ইত্যাদি।
  • 4. স্কুলের স্পোর্টস অ্যাকটিভিটি: স্কুলের খেলা বা অন্যান্য শারীরিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করুন। এটি শরীর ও মন উভয়ই ভালো রাখবে।
  • 5. ছোট ওয়ার্কআউট সেশন: পড়ার ফাঁকে ছোট ছোট ওয়ার্কআউট সেশন করতে পারেন। যেমন, ১০ মিনিটের পুশ-আপ, স্কোয়াট বা লাঞ্জ।

কিছু সাধারণ টিপস:

  • – সময় নির্ধারণ: প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি সময় এক্সারসাইজের জন্য নির্ধারণ করুন। এটি আপনাকে রুটিন মেনে চলতে সহায়ক হবে।
  • – বন্ধুদের সাথে ব্যায়াম: বন্ধুদের সাথে ব্যায়াম করলে উদ্দীপনা বাড়ে এবং এটি মজাদার হয়ে ওঠে।
  • – বিরতির সময় ব্যায়াম: পড়াশোনার মাঝে বিরতির সময় স্ট্রেচিং বা ছোট এক্সারসাইজ করতে পারেন। এটি মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে।
  • – স্কুলের স্পোর্টস অ্যাকটিভিটিতে অংশগ্রহণ: স্কুলের খেলা বা অন্যান্য ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিন।

শারীরিক ও মানসিক উপকারিতা

নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে শরীরের সুস্থতা বৃদ্ধি পায় এবং মানসিক চাপ কমে। এটি মনোযোগ বাড়াতে, ক্লান্তি দূর করতে এবং মেজাজ ভালো রাখতে সহায়ক। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায়ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত এক্সারসাইজ করার অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করুন। সহজ ও উপভোগ্য ব্যায়ামগুলি শুরু করতে পারেন এবং ধীরে ধীরে তা বাড়ান। এতে পড়াশোনার পাশাপাশি আপনার জীবনযাত্রা আরও সমৃদ্ধ হবে।

চাকরিজীবীদের জন্য এক্সারসাইজ

চাকরিজীবীদের জন্য দৈনিক কাজের চাপের মাঝে নিয়মিত এক্সারসাইজ করা একটু কঠিন হতে পারে। তবে, এটা কিন্তু একেবারে অসম্ভব নয়। কিছু সহজ এবং কার্যকর ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনি আপনার শরীরকে সচল এবং সুস্থ রাখতে পারেন।

 সহজ ও কার্যকর এক্সারসাইজ

1. হাঁটা: অফিসে বা কাজের মাঝে প্রতি ঘণ্টায় চার-পাঁচ মিনিট হাঁটা অভ্যাস করুন। অফিসে বসে কাজ করার সময় প্রতি ১ ঘণ্টা পর পর একটু উঠুন এবং হাঁটাহাঁটি করুন।

2. সিঁড়ি ব্যবহার: অফিসে আসা-যাওয়ার সময় লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। এটি শরীরের শক্তি বাড়াবে এবং ক্যালোরি পোড়াবে।

3. ডেস্ক এক্সারসাইজ: কাজের মাঝে সহজ কিছু ডেস্ক এক্সারসাইজ করতে পারেন। যেমন, চেয়ার স্কোয়াট, সিটেড লেগ লিফট, বা ডেস্ক পুশ-আপ।

4. স্ট্রেচিং: মাঝে মাঝে স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ করুন। এটি পেশীর চাপ কমাতে সাহায্য করবে এবং শরীরকে রিলাক্স করবে।

5. লাঞ্চ ব্রেক এক্সারসাইজ: লাঞ্চের সময় ১৫-২০ মিনিট হাঁটুন বা হালকা ব্যায়াম করুন। এটি আপনার শরীরকে সক্রিয় রাখবে এবং মন ভালো করবে।

6. পরিবারের সাথে হাঁটুন: অফিস থেকে ফিরে পরিবারের সাথে হাঁটুন বা খেলার সময় কাটান। এটি শুধু আপনার শরীরকেই সুস্থ রাখবে না, বরং পারিবারিক বন্ধনও মজবুত করবে।

কিছু সাধারণ টিপস:

  • – সময় নির্ধারণ: প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি সময় এক্সারসাইজের জন্য নির্ধারণ করুন, যেমন সকাল বা সন্ধ্যা।
  • – বন্ধুদের সাথে ব্যায়াম: সহকর্মীদের সাথে একত্রে ব্যায়াম করলে এটি মজাদার এবং উৎসাহজনক হয়ে ওঠে।
  • – অফিসের ফিটনেস কার্যক্রমে অংশগ্রহণ: অফিসে যদি কোনও ফিটনেস কার্যক্রম থাকে, তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করুন।
  • – পানি পান: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে এবং এক্সারসাইজে সহায়ক হবে।

শারীরিক ও মানসিক উপকারিতা

নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে। এছাড়া, এক্সারসাইজ মানসিক চাপ কমায়, মন ভালো রাখে এবং কর্মক্ষমতা বাড়ায়। এটি আপনার কর্মজীবনে উদ্দীপনা যোগ করবে এবং আপনাকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখবে।

এক্সারসাইজের মাধ্যমে আপনার কর্মজীবনকে আরও উজ্জ্বল এবং আনন্দময় করে তুলুন। নিয়মিত এক্সারসাইজ অভ্যাসে আনুন এবং শরীর ও মনকে সুস্থ রাখুন!

ব্যায়ামের শারীরিক গুরুত্ব

ব্যায়াম বা শারীরিক কার্যকলাপ শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি এবং এটি আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখানে নিয়মিত ব্যায়ামের কিছু শারীরিক উপকারিতা তুলে ধরা হলো:

  • 1. হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য উন্নত করা: নিয়মিত ব্যায়াম হৃদপিণ্ডের পাম্পিং ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে।
  • 2. ওজন নিয়ন্ত্রণ: ব্যায়াম ক্যালোরি পোড়ায় এবং মেটাবলিজম বাড়ায়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ওজন হ্রাস এবং শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখতে সহায়ক।
  • 3. পেশীর শক্তি ও সহনশীলতা বাড়ানো: ব্যায়াম পেশী শক্তি বাড়ায় এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি করে। এটি শরীরকে শক্তিশালী এবং সক্রিয় রাখতে সহায়ক।
  • 4. হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি: ব্যায়াম হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় এবং অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমায়। এটি হাড়কে শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
  • 5. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো: নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যা বিভিন্ন সংক্রমণ এবং রোগ থেকে রক্ষা করে।
  • 6. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: ব্যায়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায়।
  • 7. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: ব্যায়াম রক্তে শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা সহজ করে।

নিয়মিত ব্যায়াম করা আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হওয়া উচিত। এটি শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়। তাই, আমাদের সকলেরই উচিত প্রতিদিন কিছু সময় ব্যায়ামের জন্য বরাদ্দ করা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনকে প্রাধান্য দেয়া।

ব্যায়ামের মানসিক গুরুত্ব

ব্যায়াম মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক কার্যকলাপের সময় মস্তিষ্কে এন্ডোরফিন নিঃসৃত হয়, যা মনের উন্নতি ঘটায় এবং উদ্বেগ কমায়। নিয়মিত ব্যায়ামে স্ট্রেস কমে এবং ঘুম ভালো হয়। এটি কর্মউদ্দীপনা বাড়ায় এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে।

শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করার পাশাপাশি ব্যায়াম মানসিক স্বাস্থ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা সহজ হয় এবং দৈনন্দিন জীবনের চাপ মোকাবিলা করা সহজ হয়। এখানে ব্যায়ামের কিছু মানসিক উপকারিতা তুলে ধরা হলো:

ব্যায়ামের মানসিক গুরুত্ব
  • 1. স্ট্রেস কমানো: ব্যায়াম স্ট্রেস হরমোন, যেমন করটিসল, হ্রাস করতে সাহায্য করে। এটি এন্ডোরফিন নামে একটি হরমোন উৎপন্ন করে, যা মস্তিষ্কে সুখানুভূতি সৃষ্টি করে এবং স্ট্রেস কমাতে সহায়ক।
  • 2. মেজাজ উন্নত করা: শারীরিক কার্যকলাপ আমাদের মস্তিষ্কে ন্যাচারাল নিউরোকেমিক্যালস নিঃসৃত করে, যা মেজাজ উন্নত করতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম বিষণ্ণতা ও উদ্বেগ কমায় এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখে।
  • 3. ঘুমের উন্নতি: নিয়মিত ব্যায়াম করলে ঘুমের গুণগতমান উন্নত হয়। শারীরিক ক্লান্তি এবং মানসিক প্রশান্তি গভীর এবং নিরবচ্ছিন্ন ঘুম নিশ্চিত করতে সহায়ক।
  • 4. আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: ব্যায়ামের ফলে শারীরিক পরিবর্তন এবং ক্ষমতার উন্নতি মানসিকভাবে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে সহায়ক। এর ফলে ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে আরও ভালো অনুভব করতে পারে।
  • 5. মানসিক শক্তি বাড়ানো: ব্যায়াম মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, যা মনোযোগ বাড়াতে এবং সৃজনশীলতা উন্নত করতে সহায়ক। এটি মানসিক ধাক্কা মোকাবিলার ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
  • 6. সামাজিক সংযোগ: গ্রুপ এক্সারসাইজ, ক্লাস বা স্পোর্টসে অংশগ্রহণ সামাজিক সংযোগ বাড়ায়। এটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী, কারণ এটি একাকীত্ব কমায় এবং সামাজিক সমর্থন বৃদ্ধি করে।
  • 7. শিথিলতা ও প্রশান্তি: ব্যায়াম আমাদের মনকে শিথিল করে এবং প্রশান্তি আনে। এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের চাপ এবং উদ্বেগ থেকে মুক্তি দিতে সহায়ক।

নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি মানসিক উন্নতি এবং সামগ্রিক সুখানুভূতির জন্য অপরিহার্য। তাই, প্রতিদিন কিছু সময় ব্যায়ামের জন্য বরাদ্দ করুন এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখুন।

বয়স অনুযায়ী এক্সারসাইজ

বিভিন্ন বয়সে বিভিন্ন ধরণের এক্সারসাইজ প্রয়োজন হয়, কারণ শরীরের চাহিদা এবং ক্ষমতা বয়সের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। এখানে বয়স অনুযায়ী উপযুক্ত এক্সারসাইজের কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো:

শিশু ও কিশোরদের জন্য (৬-১৭ বছর)

  • 1. খেলা ও ব্যায়াম: শিশুদের জন্য সবচেয়ে ভালো এক্সারসাইজ হলো খেলা। ফুটবল, বাস্কেটবল, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো ইত্যাদি খেলার মাধ্যমে শরীর সক্রিয় থাকে।
  • 2. স্ট্রেচিং ও ফ্লেক্সিবিলিটি: সহজ স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ শিশুদের শরীরকে নমনীয় ও শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে।
  • 3. শক্তি বাড়ানো: হালকা ভারোত্তোলন বা বডিওয়েট এক্সারসাইজ যেমন পুশ-আপ, স্কোয়াট, এবং পুল-আপ করতে পারে।

তরুণদের জন্য (১৮-৩৫ বছর)

  • 1. কার্ডিওভাসকুলার এক্সারসাইজ: তরুণদের জন্য দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, জগিং ইত্যাদি কার্ডিও এক্সারসাইজ খুব উপকারী।
  • 2. ভারোত্তোলন: জিমে ভারোত্তোলন বা রেজিস্টেন্স ট্রেনিং করতে পারে, যা পেশীর শক্তি ও ভলিউম বৃদ্ধি করে।
  • 3. মিশ্র ব্যায়াম: যোগব্যায়াম ও পাইলেটসের মাধ্যমে শরীরের ফ্লেক্সিবিলিটি ও স্ট্রেংথ বাড়াতে পারে।

 মধ্যবয়স্কদের জন্য (৩৬-৬০ বছর)

  • 1. অয়্যারোবিক এক্সারসাইজ: মাঝারি তীব্রতার অয়্যারোবিক এক্সারসাইজ যেমন দ্রুত হাঁটা, জগিং, এবং সাইকেল চালানো।
  • 2. শক্তি বৃদ্ধি: হালকা থেকে মাঝারি ওজনের ভারোত্তোলন বা রেজিস্টেন্স ব্যান্ডের মাধ্যমে শক্তি বৃদ্ধি।
  • 3. ফ্লেক্সিবিলিটি ও ব্যালেন্স: যোগব্যায়াম, তায় চি বা পাইলেটসের মাধ্যমে ফ্লেক্সিবিলিটি ও ব্যালেন্স উন্নত করা।

 প্রবীণদের জন্য (৬০ বছরের ঊর্ধ্বে)

  • 1. নিয়মিত হাঁটা: প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটা শরীরকে সক্রিয় ও স্বাস্থ্যবান রাখে।
  • 2. হালকা স্ট্রেচিং: সহজ স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ শরীরের ফ্লেক্সিবিলিটি ও পেশীর স্বাস্থ্য বজায় রাখে।
  • 3. ব্যালেন্স এক্সারসাইজ: ব্যালেন্স এক্সারসাইজ যেমন তায় চি, যা পতনের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

বয়স অনুযায়ী উপযুক্ত এক্সারসাইজ নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়। বয়স যতই হোক, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বজায় রাখার জন্য নিয়মিত এক্সারসাইজ করা উচিত। নিজস্ব ক্ষমতা ও সুযোগ অনুযায়ী এক্সারসাইজ নির্বাচন করুন এবং শরীর ও মনকে সুস্থ রাখুন।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *