কেন খাবেন আপেল, বিটরুট ও গাজর দিয়ে তৈরি এবিসি জুস

কেন খাবেন আপেল, বিটরুট ও গাজর দিয়ে তৈরি এবিসি জুস

আপেল, বিটরুট এবং গাজর—এই তিনটি উপাদান আলাদা স্বাদ এবং বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত, কিন্তু পুষ্টিগুণের দিক থেকে এগুলি অসাধারণ। ফল হোক কিংবা সবজি, কাঁচা হোক বা রান্না করা—স্বাস্থ্যসচেতন প্রতিটি মানুষই প্রায়শই এই তিনটি খাবার নিজেদের খাদ্যতালিকায় রাখেন। তবে, এই তিনটি উপাদান যখন একসঙ্গে মেশানো হয়, তখন তৈরি হয় একটি বিশেষ পানীয়—এবিসি জুস, যা এককথায় স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু।

এবিসি জুস কীভাবে তৈরি করবেন?

এবিসি জুস তৈরি করতে যা যা লাগবে:

 ১টি মাঝারি আকারের আপেল

 ১টি মাঝারি আকারের গাজর

 অর্ধেক বিটরুট

 কিছু আদা

 ২ কাপ পানি

 ১ চা চামচ লেবুর রস

 ১ টেবিল চামচ মধু

প্রণালি: প্রথমে আপেল, গাজর এবং বিটরুট ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। এরপর ব্লেন্ডারে এই সব উপাদান যোগ করে ২ কাপ পানি দিয়ে কিছুক্ষণ ব্লেন্ড করুন, যতক্ষণ না সব উপাদান একসঙ্গে মিশে যায়। পরে এতে ১ চা চামচ লেবুর রস এবং ১ টেবিল চামচ মধু যোগ করুন। আবার কিছু সেকেন্ড ব্লেন্ড করে নিন। সবশেষে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিয়ে পরিবেশন করুন। তৈরি হয়ে গেল স্বাস্থ্যকর এবিসি জুস!

এবিসি জুসের পুষ্টিগুণ

এবিসি জুসকে স্বাস্থ্যসচেতনদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে কারণ এর পুষ্টিগুণ অমূল্য। প্রতিটি ১০০ মিলিলিটার এবিসি জুসে থাকে প্রায় ৪৫৫০ কিলোক্যালরি, ১০১২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৮৯ গ্রাম শর্করা এবং ০.৫ গ্রাম প্রোটিন। এছাড়া, এটি প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজের একটি ভালো উৎস।

এবিসি জুস খেলে যেসব উপকার পাবেন

  • বিষাক্ত পদার্থ দূর করা: 
  •    এবিসি জুস শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে। এটি রক্তের শ্বেত রক্তকণিকা ও হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বাড়ায়, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং শক্তি বৃদ্ধি করে। এর ফলে শরীরের ক্লান্তি কমে এবং এটি নিয়মিত কার্যক্রম চালাতে সহায়ক।
  • উজ্জ্বল ত্বক এবং স্বাস্থ্যকর চুল: 
  •    এবিসি জুস ত্বক এবং চুলের জন্য বিশেষ উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ ত্বককে নমনীয় রাখে এবং বলিরেখা, বার্ধক্যজনিত দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি, চুলের স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি এবং উজ্জ্বলতা বাড়াতে এটি কার্যকর।
  • পাকস্থলীর কার্যকারিতা বাড়ানো: 
  •    এবিসি জুসে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়া সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। এটি বিপাক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং চোখের ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে।
  • ওজন কমানো: 
  • এবিসি জুসে থাকা আঁশ শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি পেটকে দীর্ঘ সময় ভরা রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে। গাজরে থাকা পটাশিয়াম অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবারের চাহিদা কমিয়ে দেয়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

সতর্কতা

যদিও এবিসি জুস স্বাস্থ্যকর, তবে অতিরিক্ত খাওয়া কখনোই ভালো নয়। বেশি পরিমাণে খেলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে এবং বিটরুটে থাকা অতিরিক্ত শর্করা রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়াতে পারে। এজন্য ডায়াবেটিক রোগীদের এই জুস খাওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। এছাড়া, অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগলে বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে এই জুস খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে ভালো।

 উপসংহার

এবিসি জুস একটি দারুণ স্বাস্থ্যকর পানীয়, যা শরীরের জন্য নানা উপকার নিয়ে আসে। ত্বক, চুল, হজম এবং ওজন কমানোর জন্য এটি কার্যকরী। তবে, অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং যাদের বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা আছে, তারা আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিয়মিত এই জুস পান করলে একদিকে যেমন শরীর সুস্থ থাকবে, তেমনি ত্বক ও চুলেও উজ্জ্বলতা আনবে।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *