নাগা চৈতন্য ও সবিতা ধুলিপালার বিয়ে: এক নতুন অধ্যায়ের শুরু।দক্ষিণী সিনেমা জগতের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা নাগা চৈতন্য এবং সবিতা ধুলিপালা সম্প্রতি নিজেদের জীবনের একটি নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন।
নাগার্জুন, নাগা চৈতন্যর বাবা, তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে একটি আবেগঘন পোস্ট শেয়ার করেছেন, যেখানে তিনি বলেন, “সবি আর চৈতন্যকে একসঙ্গে এক সুন্দর অধ্যায় শুরু করতে দেখা আমার জন্য অত্যন্ত বিশেষ এবং আবেগঘন মুহূর্ত। আমার প্রিয় ‘চায়’-কে শুভেচ্ছা, আর প্রিয় সবিতাকে আমাদের পরিবারে স্বাগত জানাই। আপনি অনেক আগেই আমাদের জীবনে অনেক আনন্দ নিয়ে এসেছেন।” এই আবেগপ্রবণ পোস্টের সঙ্গে তিনি তার ছেলে নাগা চৈতন্য ও সবিতা ধুলিপালার বিয়ের একগুচ্ছ রঙিন ছবি শেয়ার করেছেন, যা সকলের মধ্যে মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে ওঠে।
বিয়ের অনুষ্ঠান: ঐতিহ্য এবং পারিবারিক মূল্যবোধ
নাগা চৈতন্য ও সবিতা ধুলিপালার বিয়েটি ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ রাতে হায়দরাবাদের অন্নপূর্ণা স্টুডিওতে অনুষ্ঠিত হয়। এই স্টুডিওটি বিশেষভাবে নাগা চৈতন্যর পরিবারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ১৯৭৬ সালে নাগা চৈতন্যর দাদু আক্কেনি নাগেশ্বর রাও নির্মাণ করেছিলেন। ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক পরিবেশে এই বিয়েটি হয়েছে, এবং স্টুডিওটি বিয়ের জন্য বেছে নেওয়ার ফলে তা একটি বিশেষ অর্থ বহন করেছে।
বিয়ের দিন শোভিতা ধুলিপালা সোনালি কাঞ্চিভরম সাড়িতে সেজে উঠেছিলেন, যা তার দক্ষিণি রূপকে আরও রাঙিয়ে তুলেছিল। তার গা ভর্তি সোনার অলংকার এবং মাথায় ফুলের সজ্জা ছিল, যা তাকে একেবারে অপরূপা বানিয়ে তুলেছিল। চৈতন্য তার ঐতিহ্যবাহী পঞ্চা এবং কুর্তা পরেছিলেন, গলায় ছিল লাল পাড়ের ওড়না, যা দক্ষিণি সংস্কৃতির একটি পরিচায়ক।
বিয়ের অনুষ্ঠানটি ছিল পারিবারিক রীতি অনুসারে, যেখানে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তারা। পুরো অনুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত ব্যক্তিগত এবং চমৎকার, প্রায় ৮ ঘণ্টা সময় ধরে চলে। অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত কড়া, এবং শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যদের এবং দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার তারকা ব্যক্তিত্বদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
অতিথি তালিকা এবং তারকা উপস্থিতি
নাগা চৈতন্য ও সবিতা ধুলিপালার বিয়েতে অনেক সুপরিচিত তারকা উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন দক্ষিণী সিনেমার চিরঞ্জীবী, আল্লু অর্জুন, নয়নতারা, দুগ্গাবতী পরিবার, এনটিআর, রামচরণ, মহেশ বাবু এবং তার স্ত্রী নম্রতা শিরোদকারসহ আরও অনেকে। এই তারকাদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে আরও মর্যাদার এবং ঐতিহ্যবাহী করে তোলে।
বিয়ের পর নাগা চৈতন্য ও সবিতা তাদের তীরুপতি মন্দির অথবা শ্রীশৈলম মন্দিরে আশীর্বাদ নিতে যাবেন, যা দক্ষিণ ভারতীয় বিয়েতে একটি ঐতিহ্য। এই মন্দিরগুলো তাদের নতুন জীবনের শুরুতে পবিত্র আশীর্বাদ প্রদান করবে।
প্রেমের সম্পর্ক: গোপন প্রেম থেকে বাগদান

নাগা চৈতন্য এবং সবিতা ধুলিপালার সম্পর্কের সূচনা হয়েছিল ২০২২ সালে। তবে তারা তাদের সম্পর্কটি দীর্ঘ সময় ধরে গোপন রেখেছিলেন, এবং কখনও পাবলিক স্পটে একসঙ্গে দেখা না গেলেও, পাপারাজ্জির ক্যামেরায় তাদের একসঙ্গে দেখা গেছে একাধিকবার। তাদের প্রেমের সম্পর্কটি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হলেও, তারা এটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করতে চাননি। কিন্তু চলতি বছরের আগস্টে তারা তাদের সম্পর্ককে বাগদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেন।
সবিতা ধুলিপালা, একজন সফল ব্যবসায়ী এবং ফ্যাশন বিশেষজ্ঞ, যিনি দক্ষিণ ভারতীয় বিনোদন জগতের বাইরেও বেশ পরিচিত। তার সোজাসাপটা জীবনধারা এবং বুদ্ধিমত্তা নাগা চৈতন্যর কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় ছিল। তাদের সম্পর্কটি উভয়ের মধ্যেই গভীর প্রেম এবং আস্থা তৈরি করেছে।
নাগা চৈতন্য ও সবিতার সম্পর্কের ভবিষ্যৎ
নাগা চৈতন্য এবং সবিতা ধুলিপালার বিয়ে শুধু তাদের ব্যক্তিগত জীবনকেই নতুন দিশা দেয়নি, বরং দক্ষিণী সিনেমা জগতেও একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে। এই জুটি তাঁদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করছেন, যেখানে তারা একে অপরের প্রতি পূর্ণ সমর্থন এবং ভালোবাসা বজায় রাখবেন।
আগামী দিনগুলোতে তারা একে অপরের পাশে থেকে জীবনের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবেন এবং নিজেদের ক্যারিয়ার এবং পারিবারিক জীবনে সফলতার শিখরে পৌঁছাবেন, এমনটাই আশা করা হচ্ছে।
এই সুন্দর ও আর্দশিক সম্পর্ক এবং স্নেহভরিত বিয়েটি অনেক তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে, এবং নাগা চৈতন্য ও সবিতা ধুলিপালার এই দম্পতি আরও অনেক সুখী মুহূর্ত কাটাবেন—এটাই তাদের শুভ জীবনের কামনা।