পাইলস বা অর্শ্বরোগ একটি সাধারণ এবং অস্বস্তিকর সমস্যা যা অনেক মানুষের জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করে।পাইলস বা অর্শ্বরোগ কেন হয়? এই রোগটি শরীরের অন্ত্র বা রেকটামের মধ্যে ফুলে ওঠা শিরাগুলির কারণে ঘটে, যা বিভিন্ন অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। আজকের এই আর্টিকেলে, আমরা জানব পাইলস বা অর্শ্বরোগ কেন হয়, এর উপসর্গ, কারণ এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত।
পাইলস বা অর্শ্বরোগ কি?
পাইলস বা অর্শ্বরোগ হল রেকটামের নীচের অংশে ফুলে ওঠা শিরা, যা সাধারণত অন্ত্রের গতি বা চাপের ফলে হতে পারে। এটি দুটি ধরনের হতে পারে—অভ্যন্তরীণ (Internal) এবং বাহ্যিক (External)। অভ্যন্তরীণ পাইলস সাধারণত রেকটামের ভিতরে থাকে, যখন বাহ্যিক পাইলস রেকটামের বাইরের অংশে গঠিত হয়।
পাইলস বা অর্শ্বরোগ হওয়ার প্রধান কারণ
পাইলস বা অর্শ্বরোগের বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। প্রধান কারণগুলো নিম্নরূপ:
– কোষ্ঠকাঠিন্য বা দীর্ঘস্থায়ী পায়খানা আটকে থাকা: কোষ্ঠকাঠিন্য পাইলসের অন্যতম প্রধান কারণ। দীর্ঘ সময় ধরে পায়খানা আটকে থাকা বা কঠিন মলের কারণে পাইলস তৈরি হতে পারে।
– অতিরিক্ত চাপ বা ভারী কাজের চাপ: দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা বা ভারী কাজ করার সময় শিরাগুলির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা পাইলসের সৃষ্টি করে।
– অতিরিক্ত ভোজন ও সঠিক পুষ্টির অভাব: সঠিক পুষ্টি না পাওয়া, বিশেষ করে ফাইবারের অভাব, পাইলসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
– অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপান: এই দুটি অভ্যাসও পাইলসের সৃষ্টি হতে সাহায্য করে।
পাইলস বা অর্শ্বরোগের উপসর্গ
পাইলসের কিছু সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে:
– রক্তপাত: পাইলসের কারণে মলত্যাগের সময় রক্তপাত হতে পারে।
– বেদনা বা অস্বস্তি: পাইলসের কারণে রেকটামের চারপাশে ব্যথা বা অস্বস্তি হতে পারে।
– প্রচণ্ড চুলকানি বা জ্বালা: পাইলসের কারণে রেকটামের চারপাশে চুলকানি বা জ্বালা হতে পারে।
– শক্ত বা ফুলে ওঠা শিরা: বাহ্যিক পাইলসে এই লক্ষণগুলি আরও স্পষ্ট হতে পারে।
পাইলস বা অর্শ্বরোগের সঠিক চিকিৎসা এবং প্রতিকার

পাইলসের চিকিৎসা এবং প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
– পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস: খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত ফাইবার, তাজা ফলমূল, শাকসবজি এবং পানি অন্তর্ভুক্ত করুন। এই খাবারগুলি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক এবং পাইলসের সমস্যা প্রতিরোধ করে।
– ভ্যাসিক ব্যায়াম এবং হাঁটা: প্রতিদিন হাঁটাহাঁটি এবং ব্যায়াম করার অভ্যাস পাইলসের উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। এতে রক্ত চলাচল বাড়ে এবং চাপ কমে।
– লবণ ও মসলাযুক্ত খাবার কমানো: লবণ এবং মসলাযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া পাইলসের সমস্যা বাড়াতে পারে। এসব খাবার পরিহার করা উচিত।
– গরম পানি দিয়ে বসা: গরম পানিতে বসে থাকার মাধ্যমে পাইলসের ব্যথা এবং চুলকানি কমানো যেতে পারে। একে “সিটজ বাথ” বলা হয়।
– ঔষধ ও ক্রীম: স্থানীয় ঔষধ এবং ক্রীম পাইলসের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে এগুলি চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করা উচিত।
– চলন্ত জীবনযাত্রা: দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা বা দাঁড়ানো থেকে বিরত থাকুন। মাঝে মাঝে হাঁটাহাঁটি করুন এবং শরীরের চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
– অপারেশন: যদি প্রাকৃতিক চিকিৎসা বা ঔষধের মাধ্যমে পাইলসের সমস্যা কমানো না যায়, তবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হতে পারে।
পাইলসের প্রতিকারকারী ঘরোয়া উপায়
পাইলস বা অর্শ্বরোগ একটি অস্বস্তিকর এবং যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা হতে পারে, তবে কিছু ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করে এর উপসর্গগুলো কমানো সম্ভব। ঘরোয়া প্রতিকারগুলো প্রাকৃতিক এবং সহজলভ্য, যা আপনি বাড়িতেই অনুসরণ করতে পারেন। এখানে কিছু কার্যকরী ঘরোয়া উপায় আলোচনা করা হলো:
- গরম পানিতে বসা (সিটজ বাথ)
গরম পানিতে বসা পাইলসের ব্যথা এবং চুলকানি কমাতে সহায়ক। গরম পানি রেকটামের চারপাশের শিরাগুলির প্রবাহে সাহায্য করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
– একটি টব বা বেসিনে গরম পানি পূর্ণ করুন।
– এতে ১৫-২০ মিনিট বসুন, যাতে রেকটাম ভালোভাবে স্নান হয়।
– এটি দিনে ২-৩ বার করা যেতে পারে।
- অ্যালো ভেরা জেল ব্যবহার করুন
অ্যালো ভেরা প্রাকৃতিকভাবে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং পাইলসের ক্ষেত্রে এটি খুবই কার্যকরী। এটি রেকটামের চারপাশে স্নিগ্ধতা এবং শীতলতা প্রদান করে, যা ব্যথা কমাতে সহায়ক।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
– অ্যালো ভেরার জেল সরাসরি affected অংশে লাগান।
– এটি প্রাকৃতিকভাবে প্রদাহ এবং চুলকানি কমায়।
– দিনে ২-৩ বার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
- কুচানো টক দই (Yogurt)
টক দই পাইলসের জন্য একটি ভালো প্রাকৃতিক প্রতিকার হতে পারে কারণ এটি অন্ত্রের স্বাভাবিক ব্যাকটেরিয়া বজায় রাখতে সাহায্য করে, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পাইলসের সমস্যা কমাতে সহায়ক।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
– প্রতিদিন এক কাপ টক দই খান।
– এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং মলের প্রবাহ উন্নত করে।
- পানি বেশি খাওয়া
পাইলসের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘরোয়া উপায় হলো পর্যাপ্ত পানি পান করা। পানি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারিতা সচল রাখে এবং অন্ত্রের কাজ সহজ করে দেয়, যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে যায় এবং পাইলসের উপসর্গ কমতে সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
– প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
– তাজা ফলের রসও পান করা যেতে পারে, যা শরীরে হাইড্রেশন বজায় রাখে।
- লবঙ্গের তেল (Clove Oil)
লবঙ্গের তেল পাইলসের ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সহায়ক। এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদানগুলি পাইলসের এলাকায় প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
– ১-২ ফোঁটা লবঙ্গের তেল কিছু তেল বা ক্রিমের সঙ্গে মিশিয়ে affected এলাকায় ম্যাসাজ করুন।
– এটি ব্যথা এবং অস্বস্তি কমাতে সহায়ক।
- কাঁচা তিল বা সিজাম (Sesame Seeds)
তিল বা সিজাম উচ্চ ফাইবারে পূর্ণ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পাইলসের সমস্যার উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। তিলের তেলও পাইলসের জন্য উপকারী।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
– প্রতিদিন এক চামচ কাঁচা তিল খান।
– তিলের তেলও affected এলাকায় মালিশ করতে পারেন।
- ঘৃতকুমারী (Ghee)
ঘৃতকুমারী বা clarified butter পাইলসের জন্য একটি পুরানো এবং কার্যকরী প্রাকৃতিক উপায়। এটি অন্ত্রের জন্য মধুর এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
– প্রতিদিন এক চামচ ঘৃতকুমারী খান।
– এটি অন্ত্রের পরিপাক ব্যবস্থা ভালো রাখে এবং মলের প্রবাহ সঠিক রাখতে সাহায্য করে।
- বিস্কুট বা মিষ্টি মিষ্টি খাবার পরিহার করুন
প্রসেসড এবং মিষ্টি খাবার পাইলসের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। অতিরিক্ত চিনি এবং মিষ্টি খাবার পাইলসের উপসর্গ বাড়িয়ে তোলে, কারণ এগুলি অন্ত্রের কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে।
কীভাবে প্রতিকার করবেন:
– প্রাকৃতিক এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন, যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য বা অতিরিক্ত চাপের ঝুঁকি কম থাকে।
- হালকা ব্যায়াম করুন
ব্যায়াম পাইলসের চিকিৎসায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং অন্ত্রের গতি বাড়াতে সহায়ক। পাইলসের রোগী যারা দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকেন, তাদের জন্য ব্যায়াম অপরিহার্য।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
– প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটুন বা হালকা ব্যায়াম করুন।
– কিছু যোগব্যায়ামও পাইলসের উপসর্গ কমাতে সহায়ক।
- চাটনী বা ঘরোয়া মশলা ব্যবহার করুন
কিছু মশলা, যেমন এলাচ, জিরা বা গোলমরিচ, পাইলসের জন্য উপকারী হতে পারে কারণ এগুলি অন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এগুলি খাবারের মধ্যে ব্যবহার করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য হতে পারে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
– প্রতিদিনের খাবারে এলাচ বা গোলমরিচ যোগ করুন।
– এটি অন্ত্রের পদ্ধতি ভালো রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে।
পাইলস বা অর্শ্বরোগ থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া উপায়গুলি খুবই কার্যকরী হতে পারে, তবে দীর্ঘস্থায়ী বা গুরুতর সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ঘরোয়া প্রতিকারগুলি সাধারণত প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ, তবে এগুলি প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় যোগ করা উচিত এবং পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
পাইলস প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন

পাইলস বা অর্শ্বরোগ একটি অত্যন্ত অস্বস্তিকর এবং যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা হতে পারে। সাধারণত, এই রোগটি অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটলে ঘটে, এবং এর প্রধান কারণ হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। সুতরাং, পাইলস প্রতিরোধের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন এনে আপনি পাইলসের ঝুঁকি কমাতে পারেন এবং এটি প্রতিরোধ করতে সক্ষম হতে পারেন। এখানে পাইলস প্রতিরোধে কিছু কার্যকরী খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করা হলো:
- ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন
ফাইবারের অভাব কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করে, যা পাইলসের অন্যতম প্রধান কারণ। তাই আপনার খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফাইবার মলের প্রবাহ উন্নত করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের উদাহরণ:
– শাকসবজি (গাজর, টমেটো, শসা, মিষ্টি আলু)
– ফল (আপেল, কলা, পেয়ারা, জাম, কমলালেবু)
– ডাল (মুগ, মসুর, ছোলার ডাল)
– হোল গ্রেইন ব্রেড এবং ব্রাউন রাইস
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন
পানি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা পাইলস প্রতিরোধে সহায়ক। পর্যাপ্ত পানি পান করলে মলের স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। যখন শরীর হাইড্রেটেড থাকে, তখন অন্ত্রের মাংসপেশীগুলি সঠিকভাবে কাজ করে, এবং মলের গতি সহজ হয়।
কীভাবে পানি পান করবেন:
– প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
– তাজা ফলের রস, নারকেল পানি, স্যুপ ইত্যাদি পান করতে পারেন।
- মসলাযুক্ত ও ভারী খাবার পরিহার করুন
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত এবং ভারী খাবার পাইলসের উপসর্গ বাড়িয়ে তোলে। এই ধরনের খাবার অন্ত্রের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা পাইলসের সমস্যা আরও গুরুতর করতে পারে। তাই পাইলস প্রতিরোধে অতিরিক্ত তেল, মশলা, তীব্র সিজনিং ও ফাস্ট ফুড পরিহার করা উচিত।
এছাড়াও, চেষ্টা করুন:
– তেলে ভাজা খাবার কম খান।
– বেকড বা গ্রিলড খাবার বেছে নিন।
- ফ্যাট এবং চিনির পরিমাণ কমান
প্রক্রিয়াজাত খাবারে উচ্চ পরিমাণে ফ্যাট এবং চিনি থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত চিনি এবং ফ্যাট অন্ত্রের কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, যা পাইলসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই ফ্যাট এবং চিনির পরিমাণ কমানো উচিত।
কীভাবে কমাবেন:
– প্রসেসড খাবার (যেমন কেক, মিষ্টি, বিস্কুট) পরিহার করুন।
– প্রাকৃতিকভাবে তৈরি খাবার গ্রহণ করুন।
- প্রোবায়োটিক খাদ্য গ্রহণ করুন
প্রোবায়োটিক খাদ্য অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বজায় রাখতে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক এবং পাইলসের ঝুঁকি কমায়। টক দই একটি জনপ্রিয় প্রোবায়োটিক খাবার, যা পাইলস প্রতিরোধে কার্যকরী হতে পারে।
প্রোবায়োটিক খাদ্যের উদাহরণ:
– টক দই
– কেফির
– কাঁচা মিষ্টি গাঁজা (কিমচি বা মিসো)
- রিফাইনড কার্বোহাইড্রেট কম করুন
রিফাইনড বা প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট যেমন সাদা ময়দার রুটি, পেস্ট্রি, পিৎজা ইত্যাদি কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে এবং পাইলসের ঝুঁকি বাড়ায়। এই খাবারের মধ্যে ফাইবার কম থাকে, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক নয়।
কীভাবে পরিবর্তন করবেন:
– সাদা রুটির বদলে হোল গ্রেইন রুটি বা ব্রাউন রাইস খান।
– প্রাকৃতিক এবং কম প্রক্রিয়াজাত খাবার বেছে নিন।
- বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া
শাকসবজি ও ফলমূল পাইলসের জন্য অত্যন্ত উপকারী, কারণ এদের মধ্যে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার থাকে। এই উপাদানগুলি অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং মলের গতি সহজ করে।
শাকসবজি ও ফলমূলের উদাহরণ:
– পালং শাক, বাঁধাকপি, ব্রকলি
– আপেল, পেয়ারা, কমলা, জাম
- পর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ করুন
আপনার শরীরের জন্য সঠিক পুষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ, এবং প্রোটিন গ্রহণ আপনার অন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করবে। বিশেষ করে ভিটামিন C এবং E পাইলসের প্রতিরোধে সহায়ক।
পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের উদাহরণ:
– সয়া প্রোডাক্ট
– বাদাম (যেমন কাজু, আখরোট)
– মাছ (যেমন স্যালমন, সারডিন)
- অতিরিক্ত মদ্যপান এবং ধূমপান পরিহার করুন
অতিরিক্ত মদ্যপান এবং ধূমপান অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে এবং পাইলসের উপসর্গ বাড়াতে পারে। এটি শরীরের জলীয় ভারসাম্যকেও প্রভাবিত করে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে।
এটাও মনে রাখুন:
– মদ্যপান এবং ধূমপান কমানো বা পুরোপুরি পরিহার করা ভাল।
- নিয়মিত খাবার গ্রহণের অভ্যাস তৈরি করুন
আপনার খাদ্যাভ্যাসে নিয়মিততা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত সময়ে খাবার খেলে অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় থাকে, এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমে। এটি পাইলস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
পাইলস বা অর্শ্বরোগ প্রতিরোধের জন্য খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, পর্যাপ্ত পানি পান, এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিহার আপনার অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করবে এবং পাইলসের ঝুঁকি কমাবে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করে আপনি পাইলস থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন এবং সুস্থ থাকতে পারবেন।