বলিউডে ‘বচ্চন পরিবার’ শব্দটি এক সময় ছিল রাজকীয়, যে পরিবারকে ঘিরে(Abhishek-Aishwarya|Divorce Rumors) ছিল সারা দেশবাসীর তুমুল আগ্রহ এবং ভালোবাসা। এর অন্যতম প্রধান সদস্য অভিষেক বচ্চন এবং ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন, যাঁদের বিয়ে নিয়ে অগণিত গুঞ্জন, বিতর্ক এবং আলোচনা হয়েছে। যদিও দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের দাম্পত্য জীবন নিয়ে বিচ্ছেদের জল্পনা উঠেছে, সম্প্রতি প্রকাশিত কিছু খবর বলছে, এই দম্পতি আবার বড় পর্দায় একসঙ্গে অভিনয় করতে যাচ্ছেন। তবে, প্রশ্ন উঠেছে – এর পেছনে আসল ঘটনা কী? তাদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কেমন হবে, এবং কেন আবার তাঁরা একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?
অভিষেক-ঐশ্বর্যার সম্পর্ক: কেমন ছিল অতীত?
অভিষেক বচ্চন এবং ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন এক সময় বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত দম্পতি ছিলেন। ২০০৭ সালে বিয়ের পর তাঁদের সম্পর্কের উপর প্রতিটি চোখ ছিল। ঐশ্বর্যাকে অভিষেকের জীবনে একটি বিশেষ স্থান দেওয়া হয়েছিল, এবং তাঁদের দাম্পত্য জীবনকে ঘিরে শোনা যায় অনেক রোমান্টিক গল্প। তাঁদের একসঙ্গে অভিনীত প্রথম ছবি ছিল ধুম ২, যেখানে তাঁদের কেমিস্ট্রি নজর কেড়েছিল। তারপর একে একে অনেক সফল ছবিতে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করেছেন, যেমন গুরু, রাবণ, এবং ঢাই ৬০৬।
তবে, বিগত কিছু বছর ধরে এই দম্পতির সম্পর্কে টানাপোড়েনের গুঞ্জন উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদ মাধ্যমে প্রায়ই তাদের বিচ্ছেদ নিয়ে বিভিন্ন খবর প্রকাশিত হয়েছে। কিছুটা মনের মধ্যে দুরত্ব, কখনোবা অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে টানাপোড়েনের কারণে তাদের সম্পর্কের উপর অন্ধকার ছড়িয়ে পড়েছিল। এরপরেও তাঁরা কখনোই প্রকাশ্যে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি।
বিচ্ছেদের গুঞ্জন – বাস্তবতা নাকি মিডিয়ার কারসাজি?
অভিষেক এবং ঐশ্বর্যার বিচ্ছেদের খবর প্রথমবার আসে ২০২০ সালে, যখন তাঁরা একে অপরের থেকে আলাদা হতে পারেন বলে গুঞ্জন ওঠে। ২০২১ সালে যখন অভিষেককে সোশ্যাল মিডিয়ায় একা একা দেখা গেল, তখন আবার সেই বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়। তারপর থেকে তাদের মধ্যে যোগাযোগের ছেদ বা একে অপরের সাথে কথা না বলার কিছু মুহূর্ত মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, যা তাদের মধ্যে দূরত্ব এবং বিচ্ছেদকে আরও তীব্র করে তোলে।
তবে, এই গুঞ্জনগুলোর মধ্যে একটি বড় প্রশ্ন ছিল – কেন এই ধরনের খবর ছড়িয়ে পড়ছে? কিছু বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনে মিডিয়ার প্রভাব এবং পাবলিক পার্সপেকটিভ অনেকাংশে দায়ী। অনেকেই মনে করেন যে, তাঁদের সম্পর্কের বিষটি অনেকটাই ব্যক্তিগত এবং বাইরের পৃথিবী সেটা বুঝতে পারে না। তাই, বিচ্ছেদের খবরগুলো শোনা যাওয়া সত্ত্বেও, তাঁদের মধ্যে ঐক্য এবং সম্মান বজায় রয়েছে।
বড় পর্দায় অভিষেক-ঐশ্বর্যার পুনর্মিলন
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বিচ্ছেদের গুঞ্জন সত্ত্বেও কেন আবার তাঁরা একসঙ্গে বড় পর্দায় আসছেন? সম্প্রতি খবর বেরিয়েছে যে, অভিষেক এবং ঐশ্বর্যা আবার একসঙ্গে একটি ছবিতে অভিনয় করবেন, যেটি পরিচালনা করবেন বলিউডের জনপ্রিয় পরিচালক আঙ্কি কাপুর। এই সিনেমার গল্প একটি রোমান্টিক ড্রামা, যেখানে একটি জটিল সম্পর্কের দিক নিয়ে চিত্রিত হবে। জানা গেছে, ছবির প্রাথমিক স্ক্রিপ্ট লেখার কাজ প্রায় শেষ, এবং শুটিং শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে।
একজন অভ্যন্তরীণ সূত্রের দাবি, “অভিষেক এবং ঐশ্বর্যা প্রায়ই একে অপরের মধ্যে গভীর শ্রদ্ধা ও সমঝোতা বজায় রেখেছেন। যদিও তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছে, তবুও তারা পেশাদারিত্বের দিক থেকে একে অপরের প্রতি সদয় এবং সম্মানজনক। তাদের একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্তটা অনেকটা পেশাদার ভাবনা থেকে এসেছে।”
এই সম্পর্কের পুনর্মিলনের বিষয়ে আঙ্কি কাপুরের প্রভাবও অনেক বেশি হতে পারে। আঙ্কি কাপুর জানেন, এই জুটির কেমিস্ট্রি সিনেমায় দেখানো হলে দর্শকরা আগ্রহী হয়ে উঠবেন। ফলে তাঁদের একসাথে কাজ করার সিদ্ধান্তের পেছনে প্রযোজকেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে পারে।
ছবির পরিচালক আঙ্কি কাপুরের ভূমিকা
বিগত কয়েক বছরে আঙ্কি কাপুর বেশ কিছু সফল ছবি পরিচালনা করেছেন। তাঁর ছবির মধ্যে সম্পর্কের জটিলতা এবং অনুভূতির গভীরতা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। তবে, তাঁর সঙ্গে অভিষেক এবং ঐশ্বর্যার সম্পর্কটি দীর্ঘদিনের। জানা গেছে, আঙ্কি কাপুর ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের সম্পর্কের শক্তি এবং দুর্বলতা সম্পর্কে গভীরভাবে জানেন। ফলে, তিনি নিজেই এই ছবির জন্য তাঁদেরকে নির্বাচিত করেছেন। শোনা যাচ্ছে, ছবির স্ক্রিপ্টে এমন কিছু বিশেষ মুহূর্ত থাকবে, যা শুধুমাত্র অভিষেক এবং ঐশ্বর্যার মধ্যে একান্তভাবে চিত্রিত হতে পারে।