বলিউডের স্টাইল আইকন এবং পপুলার দম্পতি রণবীর সিং এবং দীপিকা পাড়ুকোন,(Deepika and Ranveer’s daughter’s Name) যারা সবসময় তাঁদের পেশাদার এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনায় থাকেন, সম্প্রতি এক দারুণ আনন্দের মুহূর্তের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন—সন্তান লাভের সুখ। সেপ্টেম্বর মাসে এই দম্পতি তাঁদের প্রথম সন্তানকে স্বাগত জানান, এবং অক্টোবরের দীপাবলির দিন, নিজেদের সন্তানের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে সবার সামনে আনেন তাঁর নামও।
একটি হৃদয়-ছুঁয়ে যাওয়া ছবি শেয়ার করে দীপিকা ও রণবীর ঘোষণা করেন, তাঁদের ছোট্ট মেয়ের নাম রাখা হয়েছে “দুয়া”। নামটির মানে হল ‘প্রার্থনা’ বা ‘আশীর্বাদ’। এটি একটি আরবি শব্দ, যা মূলত মুসলিম সম্প্রদায়বদ্ধ পরিবারের মধ্যে জনপ্রিয়। এই নামটি রাখার মাধ্যমে রণবীর এবং দীপিকা তাঁদের সন্তানের জন্য শুভেচ্ছা এবং প্রার্থনা জানিয়েছেন—যার মধ্যে রয়েছে একধরনের শান্তি ও আশীর্বাদ কামনা।
তবে, সন্তান নামকরণের পর সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে শুরু হয়ে গেছে এক উত্তাল বিতর্ক। অনেক নেটিজেন এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী প্রশ্ন তুলেছেন, “আপনি তো হিন্দু, কেন মুসলিম নাম রাখলেন?” এবং কিছু মন্তব্যে এমনও বলা হয়েছে যে, তারা কি নিজেদের ধর্ম ভুলে গেছেন? এর ফলে, দীপিকা ও রণবীরকে একটি ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
নাম নিয়ে বিতর্কের কারণ কী?
‘দুয়া’ নামটি মূলত মুসলিম সংস্কৃতি থেকে এসেছে, তবে দীপিকা ও রণবীর তাঁদের সন্তানের নামের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কাজ করেননি, বরং একটি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। তারা নিজেদের সন্তানের জন্য এমন একটি নাম চেয়েছিলেন, যার মধ্যে শান্তি, আশীর্বাদ এবং শুভকামনা থাকবে। ‘দুয়া’ শব্দটি আরবি ভাষায় এসেছে, যার মানে “প্রার্থনা” বা “আশীর্বাদ”—এটি এমন একটি নাম, যা যে কোন ধর্মের মানুষের জন্য শুভ এবং আশীর্বাদময় হতে পারে। কিন্তু ধর্মীয় বা সংস্কৃতিগত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কিছু ব্যবহারকারী এতে একটি বিতর্কের বিষয় দেখেছেন।
রণবীর-দীপিকা: শান্ত প্রতিক্রিয়া
এতগুলো বিতর্ক সত্ত্বেও দীপিকা এবং রণবীর তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন এবং সিদ্ধান্ত সম্পর্কে চুপ থাকলেও, তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রযোজকেরা জানিয়েছেন, এটি ছিল তাঁদের পরিবারের একান্ত সিদ্ধান্ত এবং এটি কেবল একটি ভালোবাসা এবং আশীর্বাদের প্রতীক। তাঁরা জানিয়েছেন, এই নামটি রাখার মাধ্যমে রণবীর এবং দীপিকা শুধুমাত্র তাঁদের শিশুর জন্য আনন্দ এবং সাফল্য কামনা করেছেন। এই নামের মধ্যে কোনো ধর্মীয় চাপ বা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়িক উদ্দেশ্য ছিল না।
বলিউডের এই প্রিয় দম্পতির সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক মিডিয়াতে খোলামেলা আলোচনা এবং একে একে অনেক কটূক্তি শোনা গেছে, তবে দীপিকা এবং রণবীর এখন পর্যন্ত শান্তভাবে এই বিতর্ক থেকে নিজেদের দূরে রেখেছেন। তারা, ব্যক্তিগতভাবে বা সামাজিকভাবে, কোনো ধরনের উত্তপ্ত বিতর্কে অংশ নিতে চান না। তাঁদের মতে, নামের পেছনে রয়েছে একান্তভাবে শুভকামনা এবং ভালোবাসা।
প্রেগন্যান্সি এবং পিতৃত্বের আনন্দ
দীপিকা পাড়ুকোন এবং রণবীর সিং, যারা জানতেন তাঁদের জীবনের এই বিশেষ মুহূর্তটি কতটা সেরা হতে চলেছে, প্রেগন্যান্সি থেকে শুরু করে সন্তানের জন্মের পরের আনন্দের মুহূর্তগুলি তাঁরা ধীরে ধীরে ভোগ করেছেন। দীপিকা মাতৃত্বের প্রথম দিকেই ক্যামেরার সামনে উপস্থিত হননি, কিন্তু তার পরের সময়ে নিজেদের সুখের মুহূর্তগুলো ফ্যানদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের সন্তান হওয়া, দীপিকার প্রেগন্যান্সি এবং বাবার ভূমিকায় রণবীর—এই সব নিয়ে এক নতুন রোমাঞ্চ তৈরি হয়েছে।
দ্বিতীয় পক্ষের জন্য, রণবীর সিং তার স্বভাবসুলভ হাস্যরস এবং মজার দৃশ্যে মাতৃত্বের আনন্দে দীপিকাকে সহায়তা করেছেন। দীপিকা, যিনি জন্মের পর নিজেকে একেবারে সন্তানের প্রতি নিবেদিত রেখেছেন, বাবার ভূমিকায় রণবীর তাঁর স্ত্রী ও শিশুর জন্য যত্নশীল এবং প্রফেশনাল মনোভাব দেখিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
ফ্যানদের মধ্যে উন্মাদনা এবং বিতর্ক
যদিও ফ্যানরা সন্তানের আগমনে আনন্দিত এবং শুভেচ্ছা জানাতে ভুলেননি, তবুও সোশ্যাল মিডিয়াতে খোলামেলা মন্তব্যের মধ্যে কিছু নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি উঠে এসেছে। অনেকেই তাঁদের ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে খোঁচা দিতে শুরু করেছেন এবং প্রশ্ন তুলেছেন, “আপনারা তো হিন্দু, কেন এমন নাম রাখলেন?” এমন মন্তব্য ও মন্তব্যকারীরা অনেক সময় এই সেলিব্রিটিদের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ খোঁজেন। কিন্তু, দীপিকা ও রণবীর নিজেদের অবস্থান থেকে একাধিক বার জানান, তারা শুধুমাত্র তাঁদের সন্তানের জন্য প্রার্থনা ও আশীর্বাদ চেয়েছেন—এটি একটি শুদ্ধ এবং হৃদয়গ্রাহী নাম, যা কোনও ধর্মীয় পরিচয়ের সাথে সম্পর্কিত নয়।
শান্তি, শুভেচ্ছা এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি
এই পুরো ঘটনাটি পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে যে, সমাজে এখনো অনেকেই ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে অন্যের পছন্দের ওপর মন্তব্য করেন, তবে নামের মাধ্যমে তাদের সন্তানকে আশীর্বাদ জানানো একটি মানবিক এবং ধর্মীয় একাত্মতার চিহ্ন হতে পারে। রণবীর সিং এবং দীপিকা পাড়ুকোন তাঁদের সন্তানের নাম রেখেছেন ‘দুয়া’—এটি একটি আশীর্বাদ, একটি শুভকামনা এবং তারা যে শান্তিপূর্ণ জীবন এবং সুখী ভবিষ্যতের আশা করেন, তার একটি সুন্দর প্রতিফলন।
তাদের জীবনের এই মুহূর্তটিকে যেমন সেলিব্রিটি দর্শকেরা সাদরে গ্রহণ করেছেন, তেমনি, সমাজের বড় অংশের জন্য এই ঘটনায় এক নতুন আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
WELLCOME TO OUR WEBSITE